সংহতি অর্থ
সংহতি অর্থ : সংহতি শব্দের অর্থ হলো ঐক্য, মিল, সম্প্রীতি বা সমন্বয়। এটি একটি সামাজিক, রাজনৈতিক, দার্শনিক এবং মানবিক ধারণা, যা বোঝায় ব্যক্তিদের মধ্যে বা সমাজের বিভিন্ন অংশের মধ্যে সহযোগিতা ও একতাবদ্ধতার মনোভাব। সংহতি একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য, যা সমাজে শান্তি, উন্নয়ন এবং প্রগতির জন্য অপরিহার্য।
সংহতির তাৎপর্য
সংহতি বলতে মূলত বোঝানো হয় মানুষের মধ্যে সম্পর্ক ও সংযোগের গভীরতা। এটি পারস্পরিক সম্মান, বিশ্বাস, সহযোগিতা এবং সহানুভূতির ওপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠে। সমাজের বিভিন্ন স্তরে, যেমন পরিবার, কর্মস্থল, ধর্মীয় গোষ্ঠী, রাজনৈতিক দল বা জাতীয় পর্যায়ে সংহতির গুরুত্ব অপরিসীম।
সংহতির গুরুত্ব
১. সামাজিক স্থিতিশীলতা:
সংহতি একটি সমাজকে স্থিতিশীল ও শান্তিপূর্ণ রাখতে সাহায্য করে। এটি ভিন্ন ধর্ম, সংস্কৃতি এবং ভাষার মানুষের মধ্যে পারস্পরিক বোঝাপড়া সৃষ্টি করে।
২. উন্নয়ন:
উন্নয়নের জন্য ঐক্যের প্রয়োজন। যখন মানুষ একসঙ্গে কাজ করে, তখন উন্নয়নের গতিও দ্রুত হয়।
৩. সমাজে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা:
সংহতির মাধ্যমে সমাজে বৈষম্য দূর করা যায় এবং ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা সহজ হয়।
৪. সংকট মোকাবিলায় সহায়ক:
জাতীয় বা আন্তর্জাতিক সংকটে সংহতি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে সংকট মোকাবিলায় সক্ষম করে তোলে।
সংহতির প্রকারভেদ
সংহতি বিভিন্ন ধরনের হতে পারে, যেমন:
- সামাজিক সংহতি: একক সমাজে বসবাসকারী মানুষদের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা।
- ধর্মীয় সংহতি: বিভিন্ন ধর্মের অনুসারীদের মধ্যে সৌহার্দ্য ও সম্মান বজায় রাখা।
- জাতীয় সংহতি: একটি জাতির মানুষের মধ্যে ঐক্য।
- আন্তর্জাতিক সংহতি: বিশ্বজুড়ে দেশগুলোর মধ্যে বন্ধুত্ব ও সহযোগিতা।
উদাহরণ
ইতিহাসে সংহতির উদাহরণ অনেক। যেমন, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে জাতীয় সংহতির মাধ্যমে স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছিল। এছাড়াও, বিভিন্ন সামাজিক আন্দোলন বা মানবিক উদ্যোগেও সংহতির প্রভাব স্পষ্ট।
উপসংহার
সংহতি শুধু একটি শব্দ নয়; এটি মানবসমাজের একটি গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তি। এটি মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে, মানবিকতা জাগ্রত করে এবং সমাজের সার্বিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখে। এক কথায়, সংহতি হলো একটি সমৃদ্ধ সমাজের মেরুদণ্ড।
আরও পড়ুন >>> মর্যাদা অর্থ